কক্সবাজার রেল প্রকল্প থেকে রামু-ঘুনধুম অংশ বাদ, ব্যয় কমছে ৬,৬৭০ কোটি টাকা!
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। ২০১০ সালে অনুমোদিত এই প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। তবে, সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রামু-ঘুনধুম অংশ আপাতত বাস্তবায়ন করা হবে না, যার ফলে প্রকল্পের ব্যয় কমে আসবে।
গতকাল প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) এক সভায় রামু-ঘুনধুম অংশ বাদ দিয়ে প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) দ্বিতীয়বার সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ব্যয় ১১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব এসেছে, যা অনুমোদন পেলে ৬,৬৭০ কোটি টাকা ব্যয় কমবে। একইসঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুনে শেষ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
২০১০ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটিতে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পটি দুই ধাপে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে অনুমোদিত হয়। প্রথম ধাপে ১০০.৮৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, এবং ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন পরিচালনাও শুরু হয়েছে। এই রেলপথের মূল উদ্দেশ্য ছিল পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত করা। দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনায় রামু থেকে ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮.৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল, যা মিয়ানমারের ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে রুট-১ এর সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই রুটের ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করে তুলেছে, ফলে আপাতত এই অংশটি স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই প্রকল্পে আরও ছয়টি অনুষঙ্গের সংশোধন করা হয়েছে, যার মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, মূল রেলপথ নির্মাণ এবং সিডি-ভ্যাটসহ বিভিন্ন খাত রয়েছে। এর কিছু খাতে ব্যয় কমেছে, আবার কিছু খাতে বেড়েছে। প্রকল্পটির বর্তমান ব্যয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিচ্ছে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। তবে, নতুন সংশোধনীতে এডিবির ঋণ কমিয়ে ৮ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের অংশ ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব এসেছে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন জানিয়েছেন, ঘুনধুম অংশ বাদ পড়ায় প্রকল্পের ব্যয়ে এ প্রভাব পড়েছে এবং ফিডিক কন্ট্রাক্টের সব নিয়ম মেনে সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন জানিয়েছেন, ঘুনধুম অংশ বাদ পড়ায় প্রকল্পের ব্যয়ে এ প্রভাব পড়েছে এবং ফিডিক কন্ট্রাক্টের সব নিয়ম মেনে সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
0 Comments