ইউক্রেনের মিসাইল হামলা: রাশিয়ার পরমাণু প্রতিক্রিয়া ও বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা কি শুরু হয়ে গেল? নাকি এটি শুধুমাত্র একটি সীমিত আক্রমণ? এ প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিশ্বে, ইউক্রেন যখন ১,০০০ দিনের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া ছয়টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালিয়েছে। বিশেষ করে এমন সময় এই হামলা হয়েছে, যখন রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম আরো শিথিল করেছে। ফলে, এই হামলা পরবর্তী সময়ে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্লেষকরা।
রাশিয়ার ব্রিয়ানস্কি এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে বলে রাশিয়া দাবি করেছে, এবং তারা এও জানিয়েছে যে, হামলা আমেরিকার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে করা হয়েছে। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি, তারা শুধু জানিয়েছে যে, ব্রিয়ানস্কি এলাকার একটি গুদামে হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যুদ্ধরত সেনাদের জন্য গোলাবারুদ সংরক্ষণ করা হচ্ছিল।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মদতপুষ্ট একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে আমেরিকার দেয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে। তবে, ওই ভিডিওর সময় সম্পর্কিত কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
এখন প্রশ্ন উঠছে, ইউক্রেনের এই হামলা কি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলবে? এপির প্রতিবেদনের অনুযায়ী, আমেরিকার শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই হামলা 'গেম চেঞ্জার' হবে না। কারণ, রাশিয়া ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, “এটি শক্তি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো বড় ভূমিকা রাখবে না।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেনের হাতে বর্তমানে তেমন পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র নেই যা রাশিয়াকে প্রকৃত ধাক্কা দিতে পারে। ডিফেন্স প্রয়োরিটিসের সামরিক বিশ্লেষণ বিভাগের পরিচালক জেনিফার কাভানাঘ বলেন, “আমেরিকার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সেই ক্ষেপণাস্ত্র নেই এবং ইউক্রেনের মূল সমস্যা হচ্ছে সেনাসদস্যের অভাব, যা কোন অস্ত্র দিয়েই পূর্ণ করা সম্ভব নয়।"
তবে, রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ ইউক্রেনের এই হামলার পর সতর্কতা সংকেত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "রাশিয়ার নতুন পারমাণবিক নীতি অনুযায়ী, যদি ন্যাটো কোনো ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার দিকে ছোড়ে, তবে সেটি রাশিয়ার উপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, যেটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত দেবে।"
এখন সবার নজর রাশিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে, যেহেতু এই হামলার ফলে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বাড়তে পারে এবং বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
1 Comments
যুদ্ধ-সংঘাত আর ভালো লাগে না। আমরা শান্তি চাই!!!
ReplyDelete