হেফাজতের সমাবেশে নেতাদের দাবি: ইসকন নিষিদ্ধ করে আ.লীগ ও ভারতকে বার্তা দিতে হবে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দাবি করেছে, ভারতের কোনো ‘সেবাদাস’কে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, ইসকন নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে, যাতে ভারত বা তাদের অনুগতরা বাংলার ক্ষমতার মসনদে আর আসতে না পারে।
আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বাদ জুমা ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনে হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এই বক্তব্য দেয়া হয়। সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় ‘ইসকন কর্তৃক মসজিদ ও আদালতের স্থাপনা ভাঙচুর এবং অ্যাডভোকেট শহীদ সাইফুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যাসহ দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র’ মোকাবেলার লক্ষ্যে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক অভিযোগ করেন, দেশে সুপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি, এই ঘটনার পিছনে থাকা মূল নায়কাদের খুঁজে বের করার দাবি জানান। মামুনুল হক বলেন, "শেখ হাসিনাকে সাইফুল হত্যার মদদদাতা হিসেবে আসামি করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ভারতের অনুকম্পা নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে কিছু রাজনৈতিক শক্তি। তাদের উদ্দেশে আমি বলছি, ভারতকে নয়, দেশের জনগণকে খুশি করুন। ভারত গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে এবং জনগণকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। বাংলাদেশের জনগণ ভারতবিরোধী হয়ে উঠেছে।"
মামুনুল হক ইসকনকে ‘উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তিনি বলেন, "যদি সরকার বা বিচার বিভাগ এই দাবি আদায় না করে, তবে হেফাজতে ইসলাম বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।"
ভারতের সম্পর্কে তিনি বলেন, "ভারত কোনো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করতে পারেনি এবং সার্ক থেকে একঘরে হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণে হস্তক্ষেপ করে তারা আমাদের ক্ষতি করেছে। তারা এখনো বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতি বুঝতে ব্যর্থ হলে, এর পরিণতি ভালো হবে না।"
মামুনুল হক আরও বলেন, "আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা ছিল বাংলাদেশের বিরোধী শক্তির মূল লক্ষ্য। এই ষড়যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ধৈর্য ধারণ করতে হবে।"
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতের নেতারা, including মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, এবং ইসলামি বক্তা আবু ত্ব–হা আদনান। সমাবেশের সঞ্চালক ছিলেন মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন।
সমাবেশে নেতারা একসঙ্গে দাবি করেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক পরিবর্তন করা হোক এবং ইসকনসহ উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
0 Comments