Editors Choice

3/recent/post-list

সাবেক আইনমন্ত্রীর দুই পিএ: আলাউদ্দিন বাবু ও শফিকুল ইসলাম টাকার গোডাউন, দুর্নীতির সাম্রাজ্য!

সাবেক আইনমন্ত্রীর দুই পিএ: আলাউদ্দিন বাবু ও শফিকুল ইসলাম টাকার গোডাউন, দুর্নীতির সাম্রাজ্য!
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দুই ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আলাউদ্দিন বাবু ও শফিকুল ইসলাম সোহাগকে ঘিরে নানা অপকর্মের গল্প রয়েছে। তারা চাকরি ও বদলি বাণিজ্য, মাদকের সিন্ডিকেট পরিচালনা, পাহাড় কাটা, এবং সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তারা এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট এবং বহুতল ভবন গড়ে তুলেছেন। এসব অপকর্মের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, যদিও ভয়ে কেউই মুখ খুলতে সাহস করেনি। বর্তমানে তারা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আশঙ্কায় বিদেশে পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আলাউদ্দিন বাবুর উত্থান
২০১৩ সালে কিছুদিনের জন্য বাহরাইনে পাড়ি জমানো বাবু এসএসসি পাশ করতেও বারবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। আনিসুল হক যখন প্রথমবার মন্ত্রী হন, তখন বাবু দেশে ফিরে আসেন এবং মন্ত্রীর বাসায় কাজের লোক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৫-২০১৮ সালে মন্ত্রীর অফিসে চা পরিবেশন করা বাবু পরে মন্ত্রীর অফিসের সকল কাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০১৮ সালে পিএ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তার আসল রূপ বেরিয়ে আসে।

সোহাগের ক্ষমতা দখল
শফিকুল ইসলাম সোহাগও প্রায় একইভাবে ক্ষমতার শীর্ষে উঠে আসেন। আনিসুল হকের ছোট ভাই আরিফুল হক রনির বাসায় কাজ করা সোহাগ, রনির মৃত্যুর পর সরাসরি মন্ত্রীর বাসায় চলে আসেন এবং সেখান থেকে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এরপর থেকেই তিনি চাকরি, বদলি এবং মাদক সিন্ডিকেট পরিচালনা করে অঢেল সম্পদ গড়ে তোলেন।

চাকরি ও বদলি বাণিজ্য
বাবু এবং সোহাগের মূল ব্যবসা ছিল চাকরি ও বদলি বাণিজ্য। বিশেষ করে থানার ওসি, সাবরেজিস্ট্রার এবং বিচারাঙ্গনের লোকদের পোস্টিং বাণিজ্যে তারা ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। একেকটি বদলির জন্য তারা ৪০-৬০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ করতেন। ঢাকার গুলশান, বনানী এবং কসবার বিভিন্ন এলাকায় তাদের নামে-বেনামে ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। 

মাদকের সিন্ডিকেট
সোহাগের অন্যতম অপকর্ম ছিল মাদকের সিন্ডিকেট পরিচালনা। কসবা এলাকায় তিনি একটি মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন, যা তাকে শত শত কোটি টাকার মালিক বানিয়েছে। এসব কার্যক্রমের কারণে তিনি স্থানীয়দের কাছে ভয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।

সম্পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার
বাবু ও সোহাগ তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল সম্পত্তি দখল করেছেন। গ্রামের লোকজনের জমি দখল থেকে শুরু করে পাহাড় কাটা পর্যন্ত সবকিছুতেই তাদের হাত ছিল। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করেনি। এমনকি মন্ত্রীর পৈতৃক বাসাতেই বাবুর বাবা ইদ্রিস থাকতেন, যেখানে তার নিজস্ব কোনো বাড়ি ছিল না।

আলাউদ্দিন বাবু ও শফিকুল ইসলাম সোহাগের দুর্নীতি এবং অপকর্মের কারণে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন এবং সাধারণ মানুষকে নিপীড়ন করেছেন। এসব কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হলেও, দীর্ঘদিন ভয়ে সবাই চুপ ছিল। বর্তমানে তারা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার খবর রয়েছে। 

Post a Comment

0 Comments