যমুনা রেলসেতু চালু হবে জানুয়ারির শেষ দিকে

 যমুনা রেলসেতু চালু হবে জানুয়ারির শেষ দিকে

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের প্রথম ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ রেলওয়ে সেতুটি ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে চালু হওয়ার আশা প্রকাশ করা হয়েছে। 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প' এর পরিচালক আল ফাত্তাহ মো: মাসুদুর রহমান সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বাসস'কে জানান, "আমরা মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেছি এবং এখন পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ হয়েছে।"

প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার এবং পূর্ব রেলস্টেশন থেকে পশ্চিম রেলস্টেশনের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। তিনি আরও জানান, "ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ রেলওয়ে সেতুর পরীক্ষামূলক চালনা শেষ হয়েছে, এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।"

সেতুর প্যারামিটার পরিমাপ এবং স্ট্যাটিক লোড পরিমাপসহ অন্যান্য সকল পরীক্ষা সফলভাবে শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রকল্পের বাজেটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৬ হাজার ৭৮০.৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার কোটি টাকা মূল সেতুর নির্মাণ এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রকল্পটির প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা দান করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), বাকি টাকা যোগান দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

প্রকল্পটি ২০১৬ সালে শুরু হয় এবং বর্তমানে দুটি জাপানি যৌথ-উদ্যোগ সংস্থা মূল কাজ সম্পন্ন করছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার উজানে গ্যাস পাইপলাইন সুবিধা সহ ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক সেতুটি নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে প্রকল্পের ভৌত কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের আগস্টে, এবং সেতুর ভিত্তি স্থাপনের কাজ ২০২১ সালের মার্চে শুরু হয়।

এই রেল সেতু দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং রাজধানী ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা বাড়াবে। নতুন সেতুটি দৈনিক ৮৮টি ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা রাখবে, যা বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুতে দিনে সর্বোচ্চ ২২টি ট্রেন চলাচল করতে পারে।

নতুন এই সেতু বাংলাদেশের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।