Editors Choice

3/recent/post-list

ডিএসই নেতারা: পুঁজিবাজারে নেতৃত্বের দুর্বলতা, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে

ডিএসই নেতারা: পুঁজিবাজারে নেতৃত্বের দুর্বলতা, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত করেছে, যার বিষয় ছিল ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’। অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজারের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “পুঁজিবাজারে সুশাসনের অবনতি সর্বনিম্নে পৌঁছেছে।” তিনি আরো জানান, অতীতে রেগুলেটরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অনেক সিদ্ধান্তের কারণে অনিয়ম বেড়েছে। তবে, ডিএসই এখন আর বাজারে হস্তক্ষেপ করবে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না। বাজার তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং বিনিয়োগকারীদের আচরণ অনুযায়ী বাজার পরিচালিত হবে।

তিনি আরও বলেন, “গত দেড় দশকে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের সুশাসনের অভাব দেখা দিয়েছে। গত দুই বছরে ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতির মাধ্যমে বাজারের বেসিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” মমিনুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন যে, ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে ডিএসইর পরিকল্পনার অগ্রগতি সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা দেওয়া যাবে।

ডিএসইর পরিকল্পনা নিয়ে তিনি জানান, ডিমিউচুয়ালাইজেশন (স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা আলাদা করা) আইন পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। একই সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের নীতিমালা সংশোধন এবং বাজার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ চলছে।

পুঁজিবাজারের একীভূতকরণ নিয়ে আলোচনা

এছাড়া, ডিএসই এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) একীভূত করার প্রস্তাবও দিয়েছেন মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, "বাংলাদেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ থাকা যৌক্তিক নয়। পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনে একটিই স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে। আমাদের দেশেও দুটি একীভূত করা উচিত, যাতে বেশি দক্ষ ও কার্যকরী হয়।" সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান প্রাথমিকভাবে কোনো বিরোধিতা করেননি, তবে তিনি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

পুঁজিবাজারে অনিয়ম শনাক্তের প্রস্তাব

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, "গত ১০ বছরে ডিএসইতে যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, তার অধিকাংশই দুর্নীতির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং অনেকের অবস্থা খারাপ।" তিনি আরও বলেন, "আইপিও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেসব শেয়ার এসেছে, সেগুলোর বিশ্লেষণ প্রয়োজন।"

ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সংঘটিত অনিয়মের একটি খতিয়ান তৈরি করার প্রস্তাব দেন এবং একটি নিরপেক্ষ ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ কমিটি গঠনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

ডিএসই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা ডিএসইতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি কার্যক্রম পরিচালনা করার চেষ্টা করছি। যদি কারসাজির সঙ্গে জড়িত কোনো কর্মকর্তা পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রযুক্তির সহায়তায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা কিছু কর্মকর্তাদের দুর্নীতি চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। তবে, বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।”

সফটওয়্যার উন্নয়ন এবং ডেটা রিকভারি পরিকল্পনা

ডিএসই ২০২৩ সালে লেনদেন সফটওয়্যারে বড় ধরনের বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছিল। এর ফলে, গত সপ্তাহে লেনদেন দেড় ঘণ্টা পর শুরু হয়েছিল। ডিএসই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সফটওয়্যার হালনাগাদ এবং ব্যাক-আপ রাখার জন্য ডেটা রিকভারি (ডিআর) ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

এতে পুঁজিবাজারের উন্নতির জন্য ডিএসই আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

Post a Comment

1 Comments

  1. দেখা যাক কতটা আগানো যায়!!!

    ReplyDelete